হিটলারের বিশ্বজয় সপ্ন
ফ্রান্সের পতনের পর ১৯৪১ সালের ২২ জুন সমস্ত চুক্তি ভঙ্গ করে হিটলার রাশিয়া আক্রমণ করল। কারণ হিটলার ভেবেছিলেন রাশিয়া অধিকার করতে পারলে সমগ্র ইউরোপ তার পদানত হবে। নেপোলিয়ানের মতো রাশিয়া আক্রমণ হিটলারের জীবনের সবচেয় বড় ভুল। রুশ বাহিনী এই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল না। জার্মানরা প্রচণ্ড গতিতে এগিয়ে চলে মস্কোর দিকে। রাশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল অধিকার করলেও শীত আসতেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল জার্মানরা। তারা পিছু হটতে আরম্ভ করল। এই সুযোগে রুশ গেরিলা বাহিনী আঘাত হানতে থাকে। শীত শেষ হতেই জার্মানরা নতুন উদ্যমে এগিয়ে চলে। রাশিয়ার দক্ষিণে ককেশাস তেলক্ষেত্র সহ বহু অঞ্চল দখল করে দেয়। তারা রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর প্রান্তে এসে পৌঁছায় কিন্তু রুশ বাহিনীর মরণপণ সংগ্রামের মুখে শেষ পর্যন্ত জার্মানরা পরাজিত হয়।
একদিকে যখন রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ চলছে, আর অন্য দিকে জেনারেল রোমেল হিটলারের নির্দেশে আফ্রিকায় আরেকটি ফ্রন্ট খোলেন। একসাথে এতগুলো ফ্রন্ট না খোলার জন্য অনেকে হিটলারকে পরামর্শ দিলেও বিশ্বজয়ের স্বপ্নে হিটলার তখন এমনই বিভোর, কারোর কোনো উপদেশ গ্রহণ করেননি। ইউরোপ জুড়ে যখন যুদ্ধ চলছে, এশিয়ার জাপান জার্মানির পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেয়। তারা ৭ ডিসেম্বর ১৯৪২ সালে আমেরিকার পার্ল হারবার বন্দরের ওপর বোমা বর্ষণ করে বিধ্বস্ত করে ফেলে। এই ঘটনার ফলে আমেরিকাও প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। প্রথম দিকে জার্মান বাহিনী সর্বত্র জয়লাভ করলেও মিত্রশক্তি যখন সম্মিলিতভাবে যুদ্ধ আরম্ভ করে তখন হিটলারের বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। অপর দিকে আফ্রিকায় ইংরেজ সেনাপতি মন্ট গোমারি রোমেলকে পরাজিত করেন। এক বছরের মধ্যেই আফ্রিকা থেকে জার্মান বাহিনীকে বিতাড়িত করে। এর পরপরি ইতালিতে মুসোলিনিকে বন্দি করা হয় এবং ফ্যাসি বিরোধী জনগণ তাকে প্রকাশ্য রাস্তায় হত্যা করে।
إرسال تعليق